আপেল-শরীরের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেশি
কেমন শরীর হলে তাহলে স্বাস্থ্য হিতকর?
বিজ্ঞানীরা বলেন, তলপেটে যাদের মেদ জমে, রোগের ঝুঁকি বেশি।
তেমন শরীরের মানুষের দেহের অবয়ব আপেলের মতো, আর এদের ঝুঁকি বেশি। বলা হচ্ছে আপেল-শরীরের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। শরীরের গড়ন যদি নাশপাতির মতো হয় তাহলে রোগের ঝুঁকি থাকে অনেক কম।
বিজন ঘোষের কথা যদি বলি (অবশ্য কাল্পনিক নাম) উঁচু লম্বা বিজন, ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উঁচু, ওজন ৪৭৪ পাউন্ড। চলিস্নশোর্ধ বিজন ঘোষের শরীরের স্থূলতা দৃশ্যমান, গত মাসে তিনি অনিদ্রা সমস্যার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন।
বাড়তি ওজন হয়ত বেশি সমস্যা করছিল তাঁর।
দেখা গেল : তার রক্তের সুগারমান বেশি, ডায়াবেটিস সনি্নকটে সেই রক্তসুগার মান বটে। তলপেটে তাঁর প্রচুর মেদ, এজন্যই বাড়তি ওজন : পেটের ভেতরের যন্ত্রগুলোর চারপাশে মেদ জমেছিল অবশ্য। এক মহলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এমন অনেক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
আরিজোনার চিকিৎসক চ্যানড্্লার বললেন, আপেল আকৃতি অবয়ব যাদের_ দেহের মধ্যভাগেও উপর অংশে যাদের বাড়তি মেদ, এদের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও আরও ভয়ানক 'মেটাবলিক সিনড্রোমের' আশঙ্কা বেশি।
'মেটাবলিক সিনড্রোমের' মতো ভয়ানক রোগ সমষ্টির একটি সূচক হলো ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। আর যে ঝুঁকি উপাদান রয়েছে সেগুলো হলো : উচ্চ রক্ত চাপ, উঁচু মান কোলেস্টেরোল ও ট্রাইগিস্নসারাইড ও এইচডিএলের নিচুমান।
মেরিল্যান্ড ক্লিনিক্যাল এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পামেলা পিক বলেন এমন মেদ জমলে বাড়ে মলাশয় মলান্দ্র ক্যান্সারের ঝুঁকি, এমনকি জবায়ু ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকিও। পেটের গভীর দেহযন্ত্রের চারপাশে জমা মেদ আছন্ন করে যকৃৎকেও। যকৃৎ তখন কোলেস্টেরোল বিপাক কার্যকরভাবে করতে পারে না। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, টাইপ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও এদের বেশি।তাই কতটুকু মেদবহুল শরীর, তা বেশি বিচার্য নয়, কোথায় মেদ জমল তা বেশি গুরম্নত্বপূর্ণ।
গবেষক পাস্কা পারামানা কোষে প্রদাহ এবং এর সঙ্গে স্থ্থূলতা ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সম্ভাব্য সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন।
গবেষকরা জেনেছেন, পেটের আনত্মরযন্ত্রের চারপাশের মেদ, ত্বকের নিচের মেদের তুলনায়, অনেক সহজে ভেঙ্গে যায় ও রক্তস্রোতে চলে আসে। নিঃসৃত হয় মেদামস্ন, মেদামস্নর মান বেশি হলে তা ইনসুলিনের প্রতি দেহকোষের সাড়া দেয়া অনেকটা ব্যাহত হয়। পারমানা দেখেছেন আপাত ৰীণদেহ লোকদেরও পেটের গভীর আনত্মরযন্ত্রের চারপাশে কিছু মেদ জমে। পারমানা তলপেটে মেদ জমার পেছনে বংশগতিকে কিছুটা হলেও দায়ী করেছেন। বয়স বাড়াও একটি বিষয়, ঋতুবন্ধউত্তর সময় বেশ সঙ্কটের।
ত্রম্নটিপূর্ণ জীবনযাপন, দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ এগুলোও কমগুরম্নত্বের নয়। চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে এড্রিনালগ্রন্থির হরমোন কর্টিসোল মান বেড়ে থাকে, তলপেটে মেদ জমার পেছনে এর ভ্থমিকা গৌন নয়। পিক বলেন, সুষম খাবার না খেলে, নিয়মিত ব্যায়াম না করলে ওজন বেশি লাগে শরীরে। তলপেটেও জমে মেদ।
চাই ৭৫% শতদল এবোবিক ব্যায়াম, বাকি রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং।
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক ল্যাববেটরি সার্ভিসেস,বারডেম, ঢাকা
Comments
Post a Comment